১) সংরক্ষণ কী ?
উত্তর :- যে যে কারণে জীবটার সংখ্যা কমে যায় সেইসব কারণগুলো যাতে না ঘটে তার ব্যবস্থা করা- তাকেই বলে সংরক্ষণ । যেমন- বনজঙ্গল না কাটা , সেখানে প্রাণীদের খাবার ও তেষ্টার জল যাতে যথেষ্ট পরিমাণে থাকে তার ব্যবস্থা করা চোরাশিকারিরা যেন তাদের মারতে না পারে সেদিকে লক্ষ রাখা ।
২) পদার্থ কাকে বলে?
উত্তর :- যার কিছুটা ভর আছে, যে কিছুটা জায়গা নেয় তাকে আমরা পদার্থ ( matter ) বলি। কঠিন, তরল আর গ্যাস হলো পদার্থের তিনটি অবস্থা।
৩) হজম মানে কী?
উত্তর :- হজম মানে হলো খাবারকে খুব ছোট ছোট কনায় ভেঙে ফেলা। যাতে খাবারের ওই কণাগুলো শরীর খুব সহজেই নিয়ে নিতে পারে।
৪) সাপে কামড়ালে কি করা উচিত?
উত্তর :- (1) ক্ষতস্থানে বিষদাঁত লেগে থাকলে তা হালকাভাবে তুলে ফেলা । ক্ষতস্থান জল দিয়ে ভালো করে ধুয়ে ফেলা দরকার ।
(2) হাতের বাহুতে / পায়ের ঊরু অংশে দড়ি হালকা করে বাঁধতে হবে । তবে খেয়াল রাখতে হবে প্রতি এক দেড় ঘণ্টা পরে বাঁধন খুলে আবার যেন হালকা ভাবে বাঁধা হয় ।
(3) সময় নষ্ট না করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া ।
(4) রোগী যাতে ভয় না পায় সেই বিষয়ে সাহস দেওয়া ।
(5) বমি করতে চাইলে বমি করতে দেওয়া ।
(6) শ্বাসকষ্ট হলে মুখে মুখ লাগিয়ে শ্বাস দেওয়া ।
৫) মালাকার কাদের বলা হয়?
উত্তর :- যারা শোলার কাজ করেন তাদের মালাকার বলা হয়।
৬) ডোকরা কাকে বলে? ডোকরার কাজ যারা করেন তাদের কি বলা হয়?
উত্তর :- পিতলের তৈরি জিনিসকে বলে ডোকরা। ডোকরার কাজ যারা করেন তাদের কোথাও মালাহার, কোথাও স্যাকরা আবার কোথাও ঢেপ্পো বলা হয়।
৭) কর্মকার কাদের বলে?
উত্তর :- যারা লোহার জিনিস তৈরি করেন তাদের কর্মকার বলে।
৮) লালন ফকির কে ছিলেন?
উত্তর :- লালন ফকির লিখেছেন ' খাঁচার ভিতর 'গান।
তিনি ছিলেন বাংলার এক মহান সাধক বাউল। যার কাছে আল্লা-হরি-রাম-রহিমের আসন ছিল সমান। যিনি প্রচার করেছিলেন মানুষে-মানুষে মিলনের বাণী। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ইনার কথা লিখেছেন ও বলেছেন।
৯) সারিগান কাকে বলে?
উত্তর :- নৌকা চালানো, তারপর ছাদপেটা, মাছধরা এইসব কাজের সঙ্গেও গান আছে। এই গানগুলিকেই বলে সারিগান।
১০) মানুষকে সামাজিক প্রাণী কেন বলা হয়?
উত্তর :- আসলে মানুষ সমাজে সবার সঙ্গে মিলেমিশে থাকে। একা একা কোন মানুষই থাকতে পারে না। মানুষ দলবেঁধে সমাজে থাকে বলেই মানুষ সামাজিক প্রাণী। হাতি, মৌমাছি, শিম্পাঞ্জিও একরকম সামাজিক প্রাণী।
১১) সমাজ মানে কি?
উত্তর :- সমাজ কথার এরকম মানে হতে পারে একসঙ্গে চলা। সকলের প্রয়োজন সকলে মিলে মেটানো। একের দরকারে সকলের সাহায্য করা।
১২) আত্মীয় কাকে বলে?
উত্তর :- একই পরিবারের শাখা-প্রশাখাকে একসঙ্গে আত্মীয় বলে।
১৩) বিশনয় কাদের বলে?
উত্তর :- দিদিমণি সেদিন রাজস্থানের একটা খুব সুন্দর গল্প শোনালেন । তবে এটা ঠিক গল্প না , সত্যি ঘটনা । প্রায় সাড়ে পাঁচশো বছর আগে জামভাজি নামে একজন খুব জ্ঞানী ব্যক্তি ছিলেন । তিনি মানুষকে পরিষ্কার - পরিচ্ছন্ন ও শান্তিতে থাকতে আর পরিবেশ ভালো রাখতে ভালো ভালো উপদেশ দিতেন । তাঁর শিষ্যরা ঊনত্রিশটা উপদেশ মেনে চলত বলে তাদের বিশনয় বলা হয় । বিশ মানে কুড়ি আর নয় যোগ করলে ঊনত্রিশ । বিশনয়রা অকারণ গাছপালা কাটে না । কোনো পশুপাখির ক্ষতি করে না । তাদের গ্রামের আনাচে কানাচে হরিণ ময়ূর ঘুরে বেড়ায় । একবার রাজার লোকেরা তাদের গ্রামের গায়ে লাগা এক জঙ্গলে গাছ কাটতে এলে , বিশনয়ি মেয়েরা গাছদের জড়িয়ে ধরে বলে- তারা গাছ কাটতে দেবে না । সৈন্যরা রেগে গিয়ে হুকুম দিলো বিশনয়িরা গাছ না ছাড়লে অস্ত্র চালাবে । কিন্তু , বিশনয়িরা গাছকে জড়িয়ে ধরে প্রাণ দিলো ।
১৪) কে ছিলেন সুন্দরলাল বহুগূণা ?
উত্তর :- আমাদের দেশের উত্তরভাগ জুড়ে রয়েছে হিমালয় । আর তারই নীচে রয়েছে অসংখ্য গ্রাম । গ্রামগুলোকে ঘিরে রেখেছে বন । একসময় জ্বালানি আর কলকারখানার জন্য কিছু মানুষ গাছ কাটতে এল । গ্রামের মানুষ গাছকে জড়িয়ে ধরল । সবাই মিলে বাধা দিল । গাছ বাঁচাতে এগিয়ে এলেন সুন্দরলাল বহুগুণা । গ্রামের মানুষদের বোঝালেন । গোটা হিমালয় জুড়ে হাঁটলেন । তখন ভারত সরকার হিমালয়ের নীচের জঙ্গলের গাছ কাটা নিষিদ্ধ করলেন । গ্রামের মানুষরা এইভাবে নিজেদের পরিবেশ নিজেরাই রক্ষা করল ।
১৫) কে ছিলেন অজিত কুমার ব্যানার্জী?
উত্তর :- পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার আরাবারি জঙ্গল । একসময় ওখানে প্রচুর গাছপালা ছিল । গ্রামের মানুষ ওই গাছ কেটে জীবন চালাত । ফলে একদিন সেখানকার পরিবেশ নষ্ট হতে শুরু করল । গাছ কমতে শুরু করল । সবাই চিন্তিত হয়ে পড়ল । এমন সময় এগিয়ে এলেন অজিত কুমার ব্যানার্জি । তিনি গ্রামের মানুষদের বোঝালেন । গ্রামের মানুষ শাল গাছের চারা বসাতে শুরু করল । তারপর সেই গাছ থেকেই তাদের জীবন চালানোর খরচ উঠতে শুরু করল । এভাবেই ফাঁকা হয়ে যাওয়া জায়গায় তৈরি হলো আবার একটি বিশাল বন ।
১৫) টীকা লেখো - মফলং পবিত্র বনভূমি।
উত্তর :- মেঘালয়ের শিলং থেকে ২৫ কিলোমিটার দুরে রয়েছে বিখ্যাত মফলং পবিত্র বনভূমি । শান্ত সুনিবিড় জঙ্গল । বড়ো বড়ো কুর্জি গাছের আড়ালে ঢাকা পরে সূর্যের আলো । নানা ধরনের ভেষজ উদ্ভিদ রয়েছে এখানে । খাসি , জয়ন্তিয়ারা আগলে রেখেছেন এই বন । কোনো রকম ফুল ফল বা পাতা ছেঁড়া কঠোরভাবে বারণ ।
১৬) টেরাকোটা কি?
উত্তর :- নরম মাটি দিয়ে নানান মূর্তি বা নকশা তৈরি করা হয়। তারপর ওই মূর্তি বা নকশাকে আগুনে পুড়িয়ে নেওয়া হয়।
১৭) টীকা লেখো - বিষ্ণুপুর মন্দির।
উত্তর :- বাবলুর বিষ্ণুপুর দেখা— বাবলু বাবা - মায়ের সঙ্গে বিষ্ণুপুরে গিয়েছিল । লালমাটির জায়গা । ওই মাটি পুড়িয়ে তৈরি ইট দিয়েই বানানো হয়েছে নানা মন্দির । মল্লরাজাদের নামেই একসময় বিষ্ণুপুরের মল্লভূম । মানে মল্লরাজাদের ভূমি বা অঞ্চল । তাঁদের সময়ে এমন অনেক মন্দির বানানো হয়েছিল । রাসমঞ্চ , মন্দিরের গায়ে টেরাকোটার নানা কাজ সত্যিই সুন্দর । তবে কোথাও কোথাও মন্দিরের গায়ে লোকেরা আঁচড় কেটেছে । সেগুলো দেখে বাবলুর মন খারাপ হয়েছিল ।
১৮) টীকা লেখো - সূর্যমন্দির।
উত্তর :- নাজমা পুরী বেড়াতে গিয়ে কোনারকেও গিয়েছিল । সেখানে সূর্যমন্দির দেখে ওর খুব ভালো লেগেছিল । মন্দিরটা একটা বিরাট রথের মতো । চাকাও রয়েছে । ও রথের চাকাগুলো গুনে ফেলেছিল । বারো জোড়া চাকা । দেয়ালগুলোতে নানারকম মূর্তি । কিন্তু মন্দিরটা ক্রমশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে । বঙ্গোপসাগরের খুব কাছেই এই মন্দির । নোনা জল - হাওয়ার জন্য মন্দিরটা নষ্ট হচ্ছে ।
১৯) জামা মসজিদ টীকা।
উত্তর :- দিল্লি বেড়াতে গিয়ে মায়া জামা মসজিদ দেখতে গেল । কী বিশাল মসজিদ ! বিরাট বিরাট গম্বুজ । সামনে বিরাট বারান্দা । সেখানে কত লোক একসঙ্গে নামাজ পড়ছে । মুঘল সম্রাট শাহজাহান এই মসজিদ বানিয়েছিলেন ।
২০) টিপু সুলতান মসজিদ টীকা।
উত্তর :- একদিন মায়া টিপু সুলতান মসজিদ দেখেছিল । পরে জেনেছিল ওই মসজিদটা কলকাতার বড়ো মসজিদগুলোর একটা । অনেকগুলো গম্বুজ মসজিদটায় । আর আছে মিনার । মসজিদের থেকে আজান শুনতে পেয়েছিল মায়া ।
২১) টীকা লেখো - ব্যান্ডেল চার্চ।
উত্তর :- তপন বাবা - মার সঙ্গে ব্যান্ডেল চার্চে বেড়াতে গিয়েছিল । চার্চটি পশ্চিমবঙ্গের সবচেয়ে পুরোনো খ্রিস্টান চার্চ । ১৬৬০ সাল নাগাদ এটা বানানো হয়েছিল । বছরের নানান সময় চার্চটি মানুষ দেখতে যায় । চার্চকে গির্জাও বলে । এখানে যিশুর জীবনের গল্প পুতুলের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ।
২২) রাজাভাতখাওয়া প্রকৃতিবীক্ষণ কেন্দ্র - টীকা।
উত্তর :- জলপাইগুড়ি জেলায় বক্সা অরণ্যের মাঝে এই সংগ্রহশালা । ভুটানের রাজার সঙ্গে কোচবিহারের রাজার যুদ্ধ হয়েছিল । এই সংগ্রহশালার দেয়ালে সেই যুদ্ধের ছবি আঁকা আছে । নানাধরনের ভেষজ উদ্ভিদ রয়েছে । নানাধরনের পশু - পাখির মৃতদেহ ওষুধ দিয়ে রাখা আছে । এই পশু ও পাখিদের দেখলে বক্সা জঙ্গল সম্পর্কে একটা ধারণা তৈরি হয় ।
২৩) নয়া-পিংলার পটচিত্র সংগ্ৰহশালা - টীকা।
উত্তর :- পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলা গ্রাম । রংবেরঙের পটচিত্রের জন্য বিখ্যাত । কাপড়ে বা কাগজের ওপর নানা রঙের ছবি আঁকা । ঘরে ঘরে নানা পটচিত্র রাখা আছে । কিছু কিছু পটচিত্র বেশ পুরোনো ।
২৪) লেপচা মিউজিয়াম - টীকা।
উত্তর :- দার্জিলিং জেলার কালিম্পং - এ আছে লেপচা মিউজিয়াম । সেখানে নানাধরনের লেখা পত্র সংগ্রহ করা হয়েছে । আর আছে পুরোনো দিনের মানুষের ব্যবহৃত নানা জিনিসপত্র ।
২৫) গান্ধী স্মারক সংগ্ৰাহালয়, ব্যারাকপুর - টীকা।
উত্তর :- ব্যারাকপুর উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুরে রয়েছে এই সংগ্রহশালা । মহাত্মা গান্ধির ব্যবহার করা জিনিসপত্র এখানে রয়েছে । তাছাড়া অনেকরকম বইপত্র , নানা ধরনের মূর্তি ও ছবি রয়েছে এই সংগ্রহশালায় ।
২৬) দিঘা বিঞ্জানকেন্দ্র - টীকা।
উত্তর :- এই বিজ্ঞানকেন্দ্রে রয়েছে আকাশ দেখার ব্যবস্থা । সামুদ্রিক নানা মাছ জীবন্ত অবস্থায় রাখা আছে কাচের বাক্সে । বৃষ্টির জল সংরক্ষণের মডেল রয়েছে এখানে । এগুলো দেখে বেশ সহজ লাগে বিজ্ঞানের বিষয়গুলো । বেশ মজা করে বোঝা যায় , জানা যায় । এছাড়া বর্ধমান , পুরুলিয়াতেও বিজ্ঞান কেন্দ্র রয়েছে ।
২৭) বিড়লা শিল্প-কারিগরি সংগ্ৰহশালা - টীকা।
উত্তর :- কলকাতায় এই সংগ্রহশালাটি অবস্থিত । এটি পূর্ব ভারতের সবচেয় পুরোনো বিজ্ঞান মিউজিয়াম । বহু রকমের যন্ত্রপাতির নমুনা রাখা হয়েছে । সেগুলো কীভাবে কাজ করে তাও নানান ছবি ও মডেল দিয়ে বোঝানো হয়েছে । এখানে একটি নকল কয়লার খনি রয়েছে । সেটা একেবারে আসল কয়লাখনির আদলে গড়া ।
২৮) গুরুসদয় দত্ত মিউজিয়াম - টীকা।
উত্তর :- কলকাতা থেকে খানিক দূরে ঠাকুরপুকুরে ব্রতচারী গ্রাম । সেখানে ব্রতচারীর প্রতিষ্ঠাতা গুরুসদয় দত্তের নামে একটি সংগ্রহশালা রয়েছে । বাংলার লোকশিল্পের নানা জিনিসপত্র রাখা আছে এই সংগ্রহশালায় ।
Comments