নৌকাযাত্রা
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
মধু মাঝির ওই যে নৌকাখানা
বাঁধা আছে রাজগঞ্জের ঘাটে----
কারো কোন কাজে লাগছে না তো,
বোঝাই করা আছে কেবল পাটে।
আমায় যদি দেয় তারা নৌকাটি
আমি তবে একশোটা দাঁড় আঁটি,
পাল তুলে দিই চারটে পাঁচটা ছটা -----
মিথ্যে ঘুরে বেড়ায় নাকো হাটে ,
আমি কেবল যাব একটি বার
সাত সমুদ্র তেরো নদীর পার।
তখন তুমি কেঁদো না মা, যেন
বসে বসে একলা ঘরের কোণে।
আমি তো মা, যাচ্ছি নাকো চলে
রামের মতো চোদ্দো বছর বনে।
আমি যাব রাজপুত্র হয়ে
নৌকা ভরা সোনা-মানিক বয়ে,
আশুকে আর শ্যামকে নেব সাথে,
আমরা শুধু যাব মা, তিনজনে।
আমি কেবল যাব একটিবার
সাত সমুদ্র তেরো নদীর পার।
ভোরের বেলা দেব নৌকা ছেড়ে,
দেখতে দেখতে কোথায় যাব ভেসে।
দুপুর বেলা তুমি পুকুর-ঘাটে,
আমরা তখন নতুন রাজার দেশে।
পেরিয়ে যাব তীরপূর্ণির ঘাট,
পেরিয়ে যাব তেপান্তরের মাঠ,
ফিরতে আসতে সন্ধ্যা হয়ে যাবে------
গল্প বলব তোমার কোলে এসে।
আমি কেবল যাব একটিবার
সাত সমুদ্র তেরো নদীর পার।
১) একটি বাক্যে উত্তর দাও :
১.১) নৌকাযাত্রা কবিতাটি কার লেখা?
উত্তর :- নৌকাযাত্রা কবিতাটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা।
১.২) কবিতাটি তাঁর কোন বই থেকে নেওয়া হয়েছে?
উত্তর :- কবিতাটি তাঁর শিশু কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে।
১.৩) নৌকাটি কোথায় বাঁধা আছে?
উত্তর:- নৌকাটি বাঁধা আছে রাজগঞ্জের ঘাটে।
১.৪) নৌকাটিতে কি রয়েছে?
উত্তর :- পাট।
১.৫) কবিতাটির শিশুটি ওই নৌকাটি পেলে কটি পাল ও দাঁড় জুড়ে নেবে?
উত্তর :- শিশুটি একশোটা দাঁড় ও পাঁচ-ছটি পাল জুড়ে নেবে।
১.৬) হাট বলতে কি বোঝায়?
উত্তর:- সপ্তাহের কোন একটা নির্দিষ্ট দিনে যে স্থানে নানা ধরনের জিনিসপত্র বিক্রি করা হয় সেই স্থানকে হাট বলে।
১.৭) শিশুটি কার নৌকা পেতে চায়?
উত্তর:- মধু মাঝির।
১.৮) সে নৌকা করে কোথায় যাবে?
উত্তর :- সে নৌকা করে সাত সমুদ্র তেরো নদীর পারে যাবে।
১.৯) সে সঙ্গে কাকে কাকে নেবে?
উত্তর:- সে সঙ্গে আশু আর শ্যামকে নেবে।
১.১০) সে তার মাকে কাঁদতে বারণ করেছে কেন?
উত্তর :- কারণ সে রামের মত চোদ্দ বছর বনে যাচ্ছে না।
১.১১) শিশুটি কি কি নিয়ে যাবে?
উত্তর :- শিশুটি সোনা-মানিক নিয়ে যাবে।
১.১২) সে কখন নৌকা ছেড়ে দেবে?
উত্তর:- সে ভোরের বেলা নৌকা ছেড়ে দেবে।
১.১৩) দুপুরবেলা তার মা কোথায় থাকবেন?
উত্তর:- দুপুরবেলা তার মা পুকুর-ঘাটে থাকবেন।
১.১৪) তখন সে কোথায় থাকবেন?
উত্তর:- তখন সে নতুন রাজার দেশে থাকবেন।
১.১৫) কোন কোন জায়গা পেরিয়ে শিশুটি যাবে?
উত্তর:- শিশুটি তীরপূর্ণির ঘাট আর তেপান্তরের মাঠ পেরিয়ে যাবে।
১.১৬) সে কখন ফিরে আসবে?
উত্তর:- সে সন্ধার সময় ফিরে আসবে।
১.১৭) নতুন জায়গায় ঘুরে আসার গল্প কিভাবে সে তার মাকে শোনাবে?
উত্তর:- সে তার মার কোলে বসে গল্প শোনাবে।
২) বাক্য রচনা করো :
বাঁধা - নদীর ঘাটে নৌকাটি বাঁধা রয়েছে।
নৌকা - নদীর এপার- ওপার করতে নৌকার প্রয়োজন।
সমুদ্র - সমুদ্র অনেক গভীর ও বিশালাকৃতির হয়।
গল্প - ঠাকুমা রোজ রাতে আমাকে গল্প শোনায়।
মাঝি - মাঝিদের খুব নিপুণ হাতে নৌকা চালাতে হয়।
৩) বর্ণ বিশ্লেষণ করো :
রাজপুত্র = র্+আ+জ্+অ+প্+উ+ত্+র্+অ।
তেপান্তর = ত্+এ+প্+আ+ন্+ত্+অ+র্+অ।
রাজগঞ্জ = র্+আ+জ্+অ+গ্+অ+ঞ্+জ্+অ।
দুপুরবেলা = দ্+উ+প্+উ+র্+অ+ব্+এ+ল্+আ।
পুকুর-ঘাট = প্+উ+ক্+উ+র্+অ+ঘ্+আ+ট্+অ।
৪) বিপরীতার্থক শব্দ লেখো :
বাঁধা - ছাড়া।
বোঝাই - খালি।
মিথ্যে - সত্যি।
সন্ধে - সকাল।
দেশে - বিদেশে।
৫) এলোমেলো বর্ণগুলি সাজিয়ে লেখো :
ত্রু পু জ রা - রাজপুত্র।
র লা দু বে পু - দুপুরবেলা।
টি র এ বা ক - একটিবার।
পা তে র ন্ত - তেপান্তর।
জ রা ঞ্জ গ - রাজগঞ্জ।
৬) ঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে লেখো :
৬.১) নৌকার মালিকের নাম ( আশু/ মধু / শ্যাম)।
উত্তর :- মধু।
৬.২) কবিতার শিশুটি যাবে ( নৌকায়/ বজরায়/ জাহাজে)।
উত্তর :- নৌকায়।
৬.৩) তার সঙ্গে যাবে ( বন্ধু/ মাঝি/ মা)।
উত্তর:- বন্ধু।
৬.৪) সে যাবে ( একদিনের / তিনমাসের / চোদ্দ বছরের) জন্য।
উত্তর :- একদিনের।
৬.৫) সাত সমুদ্র তেরো নদীর পারে ( তেপান্তরের মাঠ /তিরপূর্ণীর ঘাট / নতুন রাজার দেশ) আছে।
উত্তর :- নতুন রাজার দেশ।
৭) বাক্য বাড়াও :
৭.১) মধু মাঝির নৌকা। (কেমন নৌকা?)
উত্তর :- মধু মাঝির পাটে বোঝাই করা নৌকা।
৭.২) পাল তুলে দিই। (কিসে? কটা?)
উত্তর :- নৌকায় ছটা পাল তুলে দিই।
৭.৩) আমি যাব। (কোথায়? কিভাবে?)
উত্তর :- আমি যাব সাত সমুদ্র তেরো নদীর পার নৌকায় চড়ে।
৭.৪) ফিরে আসতে সন্ধ্যা হয়ে যাবে। (কোথা থেকে?)
উত্তর :- নতুন রাজার দেশ থেকে ফিরে আসতে সন্ধ্যা হয়ে যাবে।
৭.৫) গল্প বলব। (কিসের গল্প?)
উত্তর:- নতুন রাজার দেশের গল্প বলব।
Comments